নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার পক্ষ থেকে মহান শিক্ষা দিবস উপলক্ষে ১৯ সেপ্টেম্বর ২৫ শুক্রবার বিকেল ৪টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্রসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক নাছিমা সরদার, শহর কমিটির সংগঠক মো. রাজু আহমেদ, সরকারী তোলারাম কলেজের সংগঠক ইফতি আহমেদ জিহাদ, সরকারী কদমরসুল কলেজের সংগঠক আহমেদ রবিন স্বপ্ন প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, আজ থেকে ৬৩ বছর পূর্বে পাকিস্তানি শাসক আইয়ুব খানের শাসনামলে ১৯৬২ সালে শিক্ষা সচিব এস. এম. শরীফের নেতৃত্বে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষা সংকোচন ও শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ। “টাকা না থাকিলে, উচ্চশিক্ষা মিলিবে না” এই ছিল শিক্ষানীতির মূল বক্তব্য। ১৯৬২ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুললে সামরিক জান্তার গুলিতে মোস্তফা, বাবুল ও ওয়াজিউল্লাহ শহীদ হন। পরবর্তীতে ছাত্র আন্দোলনের চাপে সামরিক শাসক শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের সেই শিক্ষানীতি বাতিল করতে বাধ্য হয়। স্বাধীন দেশে প্রথম কুদরতে খুদা শিক্ষা কমিশন থেকে শুরু করে কবীর চৌধুরী শিক্ষা কমিশন পর্যন্ত সবগুলো কমিশনই মূলত শিক্ষার সংকোচন ও শিক্ষার বাণিজ্যিক ধারা বজায় রেখেছে। ফলে দেশে আজ শিক্ষার সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বর্তমানে শিক্ষায় জাতীয় বাজেট মাত্র ১২.১০৭ শতাংশ, যেখানে ছাত্রসমাজের দাবি জাতীয় বাজেটের ২৫ শতাংশ।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, শিক্ষার নামে ভর্তি ফি বৃদ্ধি ও নামে-বেনামে ফি আদায় চলছে। ২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ফরম পুরণের জন্য অতিরিক্ত ফি নির্ধারণ করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত আবাসন, ক্লাসরুম, লাইব্রেরি-সেমিনার কক্ষ, পরিবহন নেই। প্রতিটি কলেজে রয়েছে শিক্ষকের সংকটসহ নানাবিধ সমস্যা। কিন্তু প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায় না। শিক্ষার এই সংকট বুর্জোয়া শাসকশ্রেণী টিকিয়ে রেখেছে, ফলে বারবার ছাত্র আন্দোলন গণআন্দোলনে রূপ নিয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম শিল্পোন্নত ধনী জেলা। কিন্তু নেই কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি মেডিকেল কলেজ। নারায়ণগঞ্জের কলেজগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি করে আসছে, কিন্তু প্রশাসন কর্ণপাত করছে না। অন্যদিকে, আবাসন সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের বাইরে মেস ভাড়া করে থাকতে হয়, যা তাদের শিক্ষাজীবন কে অনিশ্চিত করে তুলেছে। সমাবেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন, অতিরিক্ত ফি বৃদ্ধি বন্ধ, প্রতিটি কলেজে ক্লাসরুম বৃদ্ধি, সেমিনার কক্ষ স্থাপন, হল ডাইনিংয়ের খাবারের মান উন্নয়নসহ শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে রাষ্ট্রকে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
সমাবেশ শুরু হওয়ার পূর্বে ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নারায়ণগঞন্জ শহীদ মিনারে পুষ্প স্তবক অর্পন করাহয়।
newsbank24.net সত্যের পথে সবসময়