নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলাধীন বন্দর রেললাইন মোড় অটোস্ট্যান্ড দখল ও আধিপত্য বিস্তার করে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের বিরোধের জেরে আবদুল কুদ্দুস (৬০) নামে এক বৃদ্ধকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে রাতেই প্রতিপক্ষের লোকজন মেহেদী (৩৮) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫ জন আসামীকে আটক করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে বন্দরসহ পুরো নারায়ণগঞ্জে আইন শৃঙ্খলার অবনতি সহ সমালোচনার ঝড় বিরাজ করছে।

গত শনিবার ২১ জুন দিবাগত রাত সাড়ে ৯ টায় বন্দর উপজেলার শাহী মসজিদ এলাকায় ও গভীর রাতে সিরাজউদ্দৌলা ক্লাবের সামনে যথাক্রমে ৫শত মিটারে মধ্যে পৃথক হত্যা কান্ডের ঘটনা দুটি ঘটে।
নিহত আব্দুল কুদ্দুস (৬০) বন্দর উপজেলার হাফেজীবাগ এলাকার মৃত সাদেক আলীর ছেলে ও রনি-জাফর গ্রুপের সমর্থক। অপর নিহত মেহেদী সালেহ নগর এলাকার জলিল মুন্সির ছেলে ও বাবু-মেহেদী গ্রুপের সদস্য।
আটককৃতরা হলেন- নান্নু খলিফার ছেলে মো. শান্ত (২৫), আলমচানের ছেলে মো. রবিন (২৮), মো. সেলিমের ছেলে মো. সোহেল (৩০), মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. কবির (৩৫), এবং কবির হোসেনের ছেলে মো. ফাহিম (২২)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর রেললাইন অটোস্ট্যান্ড নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাওসার আশার অনুসারী রনি-জাফর গ্রুপের সাথে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির নেতা হান্নান সরকারের অনুসারী বাবু-মেহেদীর বিরোধ চলছিলো। এ নিয়ে গত শুক্রবার দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৮ জন আহত হয়।
সেই বিরোধের জের ধরে শনিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বাবু-মেহেদী গ্রুপের লোকজন রনি-জাফর গ্রুপের সমর্থক আব্দুল কুদ্দুস কে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই খবর পেয়ে নিহতের স্বজন ও রনি-জাফর গ্রুপের লোকজন রেললাইন সংলগ্ন এলাকার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
এদিকে, রাত ১ টার দিকে বন্দর সিরাজুদ্দৌলার ক্লাব মাঠ দিয়ে মেহেদী ও তার লোকজন যাওয়ার পথে তাদেরকে দেখে রনি- জাফর গ্রুপের লোকজন ধাওয়া দিয়ে মেহেদীকে ধরে গণপিটুনি দেয় ও ছুরিকাঘাতে আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে শহরের খানপুর ৩শ’ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষের জেরে উভয়পক্ষের হামলায় কুদ্দুস ও মেহেদী নিহত হয়েছেন। নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী বলেন, রাতে দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।