নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা, বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলকে গণধোলাই এর অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জামিন পেয়েছেন সোনারগাঁ থানা বিএনপি’র সহ-সভাপতি বজলুর রহমান ওরফে ডন বজলু, সোনারগাঁও থানা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক রাসেল আহমেদ, কামাল হোসেনসহ ১৬ জন।
সোমবার ৮ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আবু শামীম আজাদের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে বিচারক ১৬ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন প্রাপ্তরা বাকিরা হলেন, গোলজার হোসেন, মোহাম্মদ নাদিম, মোঃ আকাশ, মোঃ সেলিম, মোঃ শামীম, মোহাম্মদ শাহজালাল, হযরত আলী, রাজ মিয়া, সাইদুর, মোহাম্মদ হানিফ, মোঃ আক্তার, ইসমাইল ও আব্দুল খালেক।
মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন বলেন, মামলাটি পুরোপুরি মিথ্যা এবং বানোয়াট। ঐদিন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের পক্ষে টেন্ডার জমা দিতে গিয়েছিলেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল। এ সময় উত্তেজিত জনগণ তাকে গণপিটুনি দেয়। এই ঘটনার সাথে আসামিদের কোন সম্পৃক্ততা নাই। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। আজ নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ বিচারক ১৬ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুন সোনারগাঁয়ের হরিপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ নেতা ও একাধিক গণহত্যা মামলার আসামি আলাউদ্দিনের পক্ষে টেন্ডার জমা দিতে যান বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল। এ সময় উত্তেজিত জনতা তাকে গণধোলাই দেয় এবং জামা কাপড় ছিঁড়ে প্রায় উলঙ্গ করে ফেলে ও সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা মটর চালক লীগের সভাপতি আলাউদ্দিন ও তার ছেলে ২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মামুন সিরাজুল মজিদ গত ১৫ বছর এই এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিলো। মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে নিয়েছে, তাদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ এলাকায় থাকতে পারেনি। একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে, জায়গা সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে। তাদের অত্যাচারে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাযাবর জীবন যাপন করেতে হয়েছে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে খুনি হাসিনা সরকার পালিয়ে যাওয়ায় ১৫ বছর পর ঘরে ফিরতে পেরেছে তারা। সেই খুনি চাঁদাবাজ আলাউদ্দিনকে আবারো প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুল।
গত ২৯ জুন এই আলাউদ্দিনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেওয়ান এন্টারপ্রাইজের পক্ষে হরিপুর ৪১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টেন্ডার নিতে আসেন বিএনপি’র বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল। এই দেওয়ান এন্টারপ্রাইজের মালিক আতাউর রহমান মুকুল নয়, এটার মালিক আলাউদ্দিন ও তার ছেলে।
ঐদিন আলাউদ্দিনের মেয়ের জামাই এবং নাতিন জামাইকে নিয়ে মুকুল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আসেন। স্থানীয়রা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে কিন্তু তিনি তাদের কোন কথা শুনেন না। তাই বিক্ষুব্ধ জনতা যারা গত ১৫ বছর আলাউদ্দিনের নির্যাতন জুলুমের শিকার হয়েছে তারা আতাউর রহমান মুকুলকে হেনস্থা করেছে।
এ বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের মাঝে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।