18 Ashin 1432 বঙ্গাব্দ ০৯-১২-২০২২
Home / সারাদেশ / ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল সহ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল সহ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : খাগড়াছড়ি সদরে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক জুম্ম ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষকদের অতিদ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল সহ প্রতিবাদী সমাবেশের আয়োজন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা শাহবাগ মোড়ে এ বিক্ষোভ মিছিল সহ প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বক্ত্যবে বলেন- আপনারা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কথা শোনান। নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসেন। কিন্তু আপনারা এখনও পাহাড়ে ধর্ষণের মহাযজ্ঞ থামাতে পারছে না। এ-ই দায় সম্পূর্ণ সরকারের। এ-ই দায় কোন পাহাড়ীর না, কোন সাংবাদিকের না। গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে রাত ৯ টার দিকে খাগড়াছড়িতে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক মারমা কিশোরীকে তিনজন সেটেলার বাঙালী কর্তৃক গণধর্ষণ হয়েছে। সে-ই ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর ৪৮ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়নি। তাই অতি দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতারের জোর দাবী জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরাম এর সহ-সভাপতি টনি ম্যাথিউ চিরান বক্তব্যে বলেন- আদিবাসীদের উপর যতবারই হামলা ও অত্যাচার হয়েছে, ততবারই দেখতে পেয়েছি অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয় না। আর গ্রেফতার করা হলেও কয়েকদিন পরই জামিন নিতে দেখতে পাই। আমরা আর কোনো আদিবাসী কিশোরীর ধর্ষণ দেখতে চাই না। এ-ই দেশ আদিবাসী ও বাঙালী সকলের জন্য নিরাপদ হোক।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈসানু মারমা বক্তব্যে বলেন- পাহাড়ে কখনো ধর্ষণের পর যৌনাঙ্গে বাঁশ ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়। কখনো চোখ উপড়ে হত্যা করা হয়। কিন্তু এসব ঘটনার কোন সুষ্ঠ বিচার আমরা পাইনি। এ-ই ধর্ষণকারীরা একটি বিশেষ গোষ্ঠীর। এদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ বাহিনী প্রস্তুত আছে। তাই তারা গণহত্যা, জুম্মদের ভূমি বেদখল, ধর্ষণ থেকে শুরু করে সকল অপকর্ম করে যাচ্ছে জুম্মদের উচ্ছেদ করার জন্য।
হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা বক্তব্যে বলেন- পাহাড়ে নারীদের উপর বারবার সংঘটিত যৌন সহিংসতা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং একটি সুপরিকল্পিত বৈষম্যের চিত্র। যদি কোন পাহাড়ী যুবক কোন অপরাধ করে, মিডিয়া তাকে সাথে সাথে ’পাহাড়ী সন্ত্রাসী’ বলে চিহ্নিত করে। কিন্তু পাহাড়ের বাঙালীরা অপরাধী হলে, তার পরিচায় আড়াল হয়। পাহাড়ের এ-ই সব ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হলে, ৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তির বিকল্প নেই।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট্র কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক অনিক কুমার দাশ বক্তব্যে বলেন- নারীদের উপর দৃষ্টিভঙ্গি এবং দেশের বিচার ব্যবস্থার কারণে, নারীদের প্রতি প্রতিনিয়ত একটার চেয়ে একটা ভয়ঙ্কর ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এর দায় রাষ্ট্রকে নিতেই হবে। আদিবাসী নারীদের উপর রাষ্ট্রের এ-ই নিপীড়নমূলক আচরণ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক সৃজন মৃ বক্তব্যে বলেন- আমরা প্রতিনিয়ত রাস্তায় দাড়াই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকার নিপীড়নের সুষ্ঠু বিচার করতে পারেনি। আদিবাসীদের উপর চলমান এ-ই নিপীড়ন বন্ধের জন্য রাষ্ট্র নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে আসছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পিসিপি শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমা’র সঞ্চালনায় বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এর সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যার উক্ত বিক্ষোভ মিছিল সহ প্রতিবাদী সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন।
পরিশেষে সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন- পাহাড়ে প্রতিনিয়ত ধর্ষণের ঘটনা হলেও আমরা কখনও বিচার পাইনি। এ-ই সব ঘটনার বিচার তো দূরের কথা, পাহাড়ে প্রায় ১৫টিরও অধিক গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত তার কোন সুষ্ঠু তদন্ত পর্যন্ত হয়নি। বাংলাদেশের সমতলে কোনো বড় ধরনের অঘটন কিংবা ১৪৪ ধারা জারি করলে সেনাবাহিনী রাস্তায় নামে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রত্যেকটি দিন শুরু হয় অঘোষিত ১৪৪ ধারার মাধ্যমে এতদিন ধরে আদিবাসী সমাজ ও আদিবাসী নারীদের প্রতি সহিংসতার ঘটনাগুলো আমাদের প্রত্যেকজনের মনে মনে গেঁথে আছে। মনে থাকা এ-ই সুপ্ত ক্ষোভগুলো একদিন আগ্নেয়গিরিতে পরিণত হবে। সে-ই দিন কিন্তু দায়ভার এ-ই রাষ্ট্রকে নিতে হবে।
ও-ই বিক্ষোভ মিছিল সহ প্রতিবাদী সমাবেশে সংহতি প্রদান করে বিভিন্ন আদিবাসী ছাত্র সংগঠন সমূহ।

আরও পড়ুন...

সরাইলে পাড় ভেঙে নিখোঁজ দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার

নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ড্রেজার দিয়ে পুকুর খনন করে বালু তোলার সময় …