15 Boishakh 1431 বঙ্গাব্দ ০৯-১২-২০২২
Home / জন দূর্ভোগ / নৌকা- ভেলায় স্কুল যাত্রা – রাস্তা নেই বিদ্যালয়ে যাওয়ার !

নৌকা- ভেলায় স্কুল যাত্রা – রাস্তা নেই বিদ্যালয়ে যাওয়ার !

নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : গ্রামের একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আছে দুই তলা চাকচিক্য ভবন। স্কুলটি মনোরম পরিবেশে হলেও নেই কোন যাতায়াতের রাস্তা। শুষ্ক মৌসুমে অন্যের জমির আইল কিংবা ঝোপঝাড় দিয়ে চলাচল করলেও ভোগান্তি বেড়ে যায় বর্ষা মৌসুমে। সামনের ছোট নদী পাড়ি দিয়ে পৌঁছিতে হয় স্কুলে। তখন চলাচলের একমাত্র ভরসা হয় কলা গাছের ভেলা কিংবা ছোট ডিঙ্গী নৌকা। কখনও কখনও ভিজে যায় পরনের কাপড়সহ শিক্ষার্থীদের বই খাতা। অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসলেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই থাকে অনুপস্থিত। ফলে পুরো বর্ষা মৌসুমে কমে যায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।

জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে ৩৫ শতক জমির ওপর ব্রহ্মপুত্র-তিস্তা নদী দ্বারা বেষ্টিত কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার পূর্ব চর পাত্রখাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। এরপর ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। প্রায় ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে নির্মিত হয় দুই তলা বিশিষ্ট একটি ভবন। ওই বিদ্যালয়ে ছয়জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ১২৪ জন।

পূর্ব চর পাত্রখাতা গ্রামটিতে প্রবেশের জন্য সেতু ও পাকা সড়ক থাকলেও এই বিদ্যালয়ে যাওয়ার নেই কোন পথ। বিদ্যালয়ের সামনে ছোট নদীর পানি শুকিয়ে গেলে তা দিয়ে হেটে চলাচল করতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। তবে বর্ষা মৌসুমে বেড়ে যায় ভোগান্তি। ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল হওয়ায় অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে এসব শিক্ষার্থীর লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা যায়।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু ছালেহ্ সরকারের খামখেয়ালিপনা ও সঠিক তদারকি না থাকায় দীর্ঘদিনেও স্কুলটিতে যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভরসা পান না অভিভাবকরা।

কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, বন্যার সময় স্কুলে আসতে খুবই কষ্ট হয়। নৌকা বা ভেলায় চরে স্কুলে আসি। কখনও কখনও বইখাতা ভিজে যায়, তাছাড়া নদীতে পড়ে যাওয়ার ভয়ও থাকে। মানুষের বাড়ির ভেতর দিয়ে আসলে গালাগালি করে, আসতে দেয় না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিয়াজ বিন রানু বলেন, শুষ্ক মৌসুমে বিভিন্নভাবে স্কুলে আসা যায়। কিন্ত ভোগান্তি বাড়ে বর্ষা মৌসুমে। স্কুলের চারপাশে তখন পানি জমে থাকে। ফলে স্কুলের সামনের ছোট নদী পার হয়ে আসতে হয়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অবগত করা হলেও কোনো প্রতিকার পাইনি। দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীসহ আমাদের শিক্ষকরা বিপাকে পড়েছেন। এ অবস্থায় ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাও দিন দিন কমে যাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের সভাপতি মর্জিনা বেগম বলেন, স্কুলে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীরা অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে। দ্রুত রাস্তা নির্মাণ করা না হলে বাকি শিক্ষার্থীদের ধরে রাখা সম্ভব হবে না। কারণ ঝুঁকি নিয়ে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে চায় না।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু ছালেহ্ সরকার বলেন, শুকনো মৌসুমে রমনা মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাস্তাটি তৈরি করে দিতে চেয়েছেন।

তবে এ বিষয়ে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমানকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আরও পড়ুন...

বিদ্যানিকেতন হাই স্কুলের ৫শ শিক্ষার্থীর মধ্যে ঈদ সামগ্রী বিতরণ

নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : নারায়ণগঞ্জের ভুঁইয়ারবাগ এলাকায় অবস্থিত বিদ্যানিকেতন হাই স্কুলের নিম্ন আয়ের ৫শ শিক্ষার্থীর …